একটা সময় ছিল, যখন পশ্চিমা ছাত্ররা মুসলিমদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে চান্স পাওয়াকে গর্বের বিষয় মনে করত। বর্তমান ইউরোপ বিজ্ঞানের জগতে পা ফেলার আগেই, মুসলিমরা নির্মাণ করেছিল সায়েন্স একাডেমি। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় ছিল তাদের অবাধ বিচরণ। তাদের সাথে টেক্কা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না।
মুসলিমদের হাত ধরেই এসেছিল বিশ্বের প্রথম ইউনিভার্সিটি। এসেছিল সংঘবদ্ধ কারিকুলাম, শিক্ষার নীতিমালা, ওয়াকফ সিস্টেম, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। জ্ঞানচর্চায় তারা ব্যয় করে চলছিল নিজেদের মূল্যবান সময়। রচনা করে যাচ্ছিল বহু এনসাইক্লোপিডিয়া। ইসলামি পাঠশালা থেকেই বেড়ে উঠেছিল ইবনু খালদুনের মতো সমাজবিজ্ঞানী, ইবনু নাফিসের মতো চিকিৎসাবিদ, আল-খারিজমির মতো গণিতজ্ঞ, সালাহউদ্দীনের মতো রাষ্ট্রনায়ক, গাযালির মতো দার্শনিক, ইবনু তাইমিয়ার মতো মুজতাহিদ।
ইসলাম তার নিজস্ব শিক্ষাব্যবস্থা দিয়েই গড়ে তুলেছিল সোনার মানুষদের। যারা সাহাবিদের মতো দ্বীনি ইলমও শিখতেন, পাশাপাশি দুনিয়া চালানোর মতো সমকালীন জ্ঞানও রপ্ত করতেন। একদিকে আবিষ্কার করতেন পৃথিবীর সব বিস্ময়কর জিনিস, অন্যদিকে বাতিলের মোকাবিলায় দাঁড়িয়ে যেতেন মুজাদ্দিদে আলফে সানী হয়ে।
ইসলামি শিক্ষাধারার সেইসব চমকপ্রদ ইতিহাস ফুটে উঠেছে শিক্ষাবিদ ড. আহমাদ শালাবীর কলমে। এটা ছিল তার অক্সফোর্ডের পিএইচডি থিসিস। লেখক অনেক কষ্ট স্বীকার করে পুরানো দলিল-দস্তাবেজ, দুর্লভ পাণ্ডুলিপি ও প্রাচীন লাইব্রেরি চষে বেড়িয়েছেন। দীর্ঘদিনের অর্জিত জ্ঞানকে তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন বইয়ের পাতায়। শিক্ষাবিদ ড. আর্থার আরবেরি বইটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আরবের প্রাজ্ঞ আলিমগণ বইটিকে রেফার করে থাকেন। ইন-শা-আল্লাহ, বইটি আমাদের সামনে ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার এক অজানা দিগন্ত উন্মোচন করবে।
Abubakar Siddique –
ইসলাম আর জ্ঞান শব্দদ্বয় একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ শুরুই হয়েছে ‘ইক্বর'(পড়)
শব্দটা দিয়ে।
ইসলামের প্রতিটা ইঞ্চিতে মিশে আছে জ্ঞানার্জন।
ইরশাদ হয়েছে”ত্বলাবুল ইলমী ফারিদ্বাতুন আলা কুল্লি মুসলিমীন”
“প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জ্ঞানার্জন ফরজ”
আচ্ছা ,ইসলামের প্রারম্ভিক সময় থেকে কিভাবে এই ইলম অর্জনের মাধ্যমগুলো কাজ করেছে ? আমাদের কি জানতে ইচ্ছে করেনা?
আমার তো ভীষণ রকম টানে এই অজানাগুলো জানতে।
এই শূন্যতা পরিপূর্ণভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশন করেছে সন্দীপন প্রকাশনী তাদের”ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাস “বইটার মাধ্যমে ।
বইটিতে ইসলামের একেবারে শুরু থেকে রাসূলুল্লাহ সা: এর পাঠশালা থেকে দারুল আকরাম হয়ে নবীজির যুগে জ্ঞানচর্চা নামকরণে পরবর্তী সাহাবায়ে কেরাম রা: দের মুখে জ্ঞানচর্চা,তাবিয়িদের যুগে জ্ঞানচর্চা ইত্যাদি ধারাবাহিক যুগের জ্ঞানচর্চার ইতিহাস গুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে।
অধ্যায়গুলো আরো সাজানো হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ, গ্রন্থাগার, শিক্ষক-সমাজ, শিক্ষার্থী সমাজ ইত্যাদি টপিকসের উপরে।
যেখানে শিক্ষাব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট যতরকম ইলিমেন্টস থাকতে পারে সার্বিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।
ইতিহাসপ্রেমী,ইলম পিপাসু, অজানাকে জানতে আগ্রহী পাঠকেরা বইটার প্রেমে পড়তে বাধ্য হবে বলে মনে করছি।
আল্লাহ কবুল করুন
sanim khan –
বাংলা ভাষাভাষীদের জন্যে ইসলামের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তেমন বেশি কাজ হয়নি। তবে সন্দীপন থেকে প্রকাশিত ❝ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাস❞ বইটি এই জায়গায় বাংলা ভাষাভাষীর জন্যে একটা বড় শুন্যস্থান পূরণ করতে পেরেছে বলে মনে করা ভুল হবেনা অবশ্যই।
.
এই বইটিতে দুটি অংশে আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম অংশে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ কাজী আতহার মুবারকপুরী রহিমাহুল্লাহর লেখা সংকলন করা হয়েছে। যেখানে প্রথম তিন প্রজন্মের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে দারুণ আলোচনা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় অংশে রয়েছে বিখ্যাত গবেষক ড. আহমাদ শালাবীর করা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ থিসিস । যেখানে ইসলামের শিক্ষাব্যবস্থার সবিস্তর আলোচনা উঠে এসেছে। মাদরাসা প্রতিষ্ঠার আগে ইলম চর্চার পদ্ধতি কেমন ছিল? কীভাবে পাঠদান করানো হতো তখন এবং সেখানে শাসকদেরই বা কি ভূমিকা ছিল? সব কিছু তথ্য-উপাত্ত সহ পেয়ে যাবেন বইটিতে।
লেখক দেখিয়েছেন ইসলামি বিশ্বে মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার শুরুর কথা। আলোচনা করা হয়েছে ইসলামি বিশ্বের গ্রন্থাগার নিয়েও। শেষ দিকে খুবই সাবলিল ভাবে আলোচনা করা হয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানান বিষয়ে। আর এত বিশাল এক গবেষণালদ্ধী কাজে লেখক কে কেমন পরিশ্রম করতে হয়েছে তা বলা বাহুল্য। ভূমিকা পড়লে তার এই বইটির পেছনের খাটাখাটি সম্পর্কে কিঞ্চিৎ ধারণা পেয়ে যাবেন।
.
যারা ইসলামের শিক্ষাব্যব্ব নিয়ে জানতে চান, যেই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে তৈরি হয়েছে যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আর শ্রেষ্ঠ ফকিহরা। যেই শিক্ষাব্যবস্থার উপহার হলো ইমাম আজম আবু হানিফা আর শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যার মতো যুগ শ্রেষ্ঠ আলেমেদ্বীন। যেই পাঠশালা থেকেই বেড়ে উঠেছিল ইবনু খালদুনের মতো সমাজবিজ্ঞানী আর সালাহ উদ্দীনের মতো রাষ্ট্রনায়কেরা। সেই শিক্ষাব্যবস্থা কেমন ছিল তা জানতে পড়তে পারেন ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাস বইটি।